বাংলা

ভারতীয় ডাব্লুএসডব্লিউএস পাঠকদের সভায় আলোচনা করা হয়েছে কিভাবে শ্রমিক শ্রেণী গাজায় সাম্রাজ্যবাদী-সমর্থিত গণহত্যা বন্ধ করতে পারে

ভারতে ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অফ ফোর্থ ইন্টারন্যাশনাল (ICFI) এবং ওয়ার্ল্ড সোশ্যালিস্ট ওয়েব সাইট (WSWS) এর সমর্থকরা ৯ই নভেম্বর 'গাজায় গণহত্যা কিভাবে বন্ধ করা যায়' এই শিরোনামে একটি জুম মিটিং এর আয়োজন করে।

ভারতের WSWS পাঠকরা এতে উপস্থিত ছিল, সভায় সভাপতিত্ব করেন দীপল জয়সেকারা, সোশ্যালিষ্ট ইকোয়ালিটি পার্টি (শ্রীলঙ্কা), ICFI-এর শ্রীলঙ্কা শাখার সাধারণ সম্পাদক। আইসিএফআই-এর কানাডিয়ান শাখা সোশ্যালিস্ট ইকুয়ালিটি পার্টি (কানাডা) জাতীয় সম্পাদক কিথ জোন্সও সভায় বক্তব্য রাখেন।

একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা, যাতে গাজাতে যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য একটি আন্দোলন গড়ে তোলার পক্ষে প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক কাজগুলির বিষয় উত্থাপন করে, যা বক্তৃতাগুলি অনুসরণ করেছিল। সভার সম্পূর্ণ কার্যধারা তামিল ভাষায় অনুবাদ করা হয়, এটি ভারতের একটি অন্যতম ভাষা যেই ভাষাতে ৭ কোটিরও বেশি মানুষ কথা বলে।

তাঁর বক্তব্যের সূচনায়, জয়সেকেরা ইজরায়েলের অতি-ডান, বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন শাসন দ্বারা সংঘটিত সাম্রাজ্যবাদী-সমর্থিত যুদ্ধাপরাধের নিন্দা করেন: “ইজরায়েলের সামরিক বাহিনী ৩০ দিনেরও বেশি সময় ধরে গাজায় প্যালেস্তীনিদের উপর ক্ষেপণাস্ত্র, বোমা এবং কামান দিয়ে নিরলসভাবে আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। মৃতের সংখ্যা এখন ১০,০০০ এর বেশি এবং ৭০,০০০ এরও বেশি আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি নারী ও শিশু...ইজরায়েলের ইহুদিবাদী শাসক প্যালেস্তীনিদের বিরুদ্ধে জাতিগত নিধন চালাচ্ছে।”

জয়সেকারা ইজরায়েলের গণহত্যাকে চীনের বিরুদ্ধে মার্কিন যুদ্ধ অভিযান এবং রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনে চলমান মার্কিন-ন্যাটো যুদ্ধের বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে রেখেছেন। 'সাম্রাজ্যবাদী শক্তি, প্রধানত মার্কিন,' এই অঞ্চলে ব্যাপক মার্কিন সামরিক গঠনের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, 'গাজার যুদ্ধকে মধ্যপ্রাচ্যে একটি ব্যাপক যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করতে ব্যবহার করছে, বিশেষ করে ইরানকে হুমকি দিচ্ছে।'

ইজরায়েলের গণহত্যার বিরুদ্ধে এবং প্যালেস্তীনিদের সমর্থনে বিশ্বব্যাপী লক্ষ লক্ষ শ্রমিক ও যুবকের বিক্ষোভের তাৎপর্যের উপর জোর দিয়ে জয়সেকেরা বলেন: “গাজা যুদ্ধের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী প্রতিবাদ সম্প্রসারণের আহ্বান জানানোর সময়, আমরা বিশেষভাবে আন্তর্জাতিকভাবে শ্রমিক শ্রেণীর কাছে আহ্বান জানাই, যারা এই যুদ্ধ এবং সাম্রাজ্যবাদীদের ক্রমবর্ধমান যুদ্ধের চালনা বন্ধ করতে পারার জন্য সক্ষম সামাজিক শক্তি, তাঁরা স্বাধীনভাবে হস্তক্ষেপ করুক যুদ্ধ বন্ধ করার সংগ্রামে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য ।”

জোন্স প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভারত সরকার এবং সামগ্রিকভাবে ভারতীয় শাসক শ্রেণীকে তাদের 'যুদ্ধে সরাসরি জড়িত থাকার জন্য যেখানে সমস্ত সাম্রাজ্যবাদী শক্তির সমর্থনে ইজরায়েলি রাষ্ট্র প্যালেস্তীনি জনগণের উপর নির্যাতন চালাচ্ছে তার নিন্দা করেন।'

সেই দিন যথাক্রমে মার্কিন পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা সচিব, এন্টনি ব্লিঙ্কেন এবং লয়েড অস্টিনের নয়াদিল্লিতে তাদের ভারতীয় প্রতিপক্ষ এস. জয়শঙ্কর এবং রাজনাথ সিংয়ের সাথে তথাকথিত 2+2 বৈঠকের জন্য আগমনের কথা উল্লেখ করে জোন্স বলেন: 'এটা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই যে এই বৈঠকটি আগামীকাল শেষ হবে অস্ত্র চুক্তির আরও ঘোষণা এবং তথাকথিত ভারত-মার্কিন বৈশ্বিক কৌশলগত অংশীদারিত্বের অংশ হিসেবে সামরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে।

“ভারতীয় সরকার সঙ্গে - এটি যোগ করা প্রয়োজন, যে কর্পোরেট মিডিয়ার সর্বসম্মত অনুমোদনের সাথে - মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ তার মৈত্রীকে আরও গভীর করতে বেছে নিয়েছে এবং প্রকাশ্যে তা করতে দেখা যায়, যখন ওয়াশিংটনের আশীর্বাদ এবং উত্সাহে ইজরাইল প্যালেস্তীনিদের গণহত্যা চালাচ্ছে এবং সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যকে গ্রাস করার জন্য যুদ্ধ শুরু করার হুমকিকে ভারতীয় শ্রমিক শ্রেণীর অবশ্যই গম্ভীর সতর্কতা হিসেবে নিতে হবে।

জোন্স দৃঢ়তার সাথে বলেন, 'ভারতীয় শাসক শ্রেণী যে অপরাধ করবে এবং যে হিংস্রতা প্রকাশ করবে - মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের সাথে তার অংশীদারিত্বের মাধ্যমে তার লুন্ঠনমূলক স্বার্থগুলি অনুসরণ করার ক্ষেত্রে তার কোন সীমাবদ্ধতা নেই।'

তিনি পরবর্তীতে তিনটি বিষয়ের দিকে ইঙ্গিত করেন যাতে ব্যাখ্যা করেন যে কেন মোদি সরকার এবং ভারতীয় শাসক শ্রেণী প্যালেস্তীনি জনগণের অধিকারের সমর্থনে তাদের তথাকথিত ঐতিহাসিক অবস্থান পরিত্যাগ করেছে এবং গাজায় প্যালেস্তীনিদের বিরুদ্ধে ইজরায়েলের গণহত্যামূলক যুদ্ধের সাথে খোলামেলাভাবে সারিবদ্ধ হয়েছে।

'প্রথমত এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল ভারত-মার্কিন কৌশলগত অংশীদারিত্ব,' তিনি ব্যাখ্যা করেন৷ “এই অংশীদারিত্বটি কংগ্রেস পার্টির নেতৃত্বাধীন মনমোহন সিং সরকার জর্জ ডব্লিউ বুশের প্রশাসনের সাথে করেছিল কারণ এটি আফগানিস্তান এবং ইরাকে অবৈধ নব্য ঔপনিবেশিক যুদ্ধ পরিচালনা করেছিল। তদুপরি, এটি শুরু থেকেই 'ধারণ করা' এবং কৌশলগতভাবে চীনকে ঘিরে ফেলার দিকে পরিচালিত হয়েছিল - এমন কিছু যা স্বীকৃত এবং যা উদযাপন করা হয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত সরকার ও সামরিক-কৌশলগত গোষ্ঠীগুলিতে।

“এখন এক দশকের পুরনো মোদির শাসনের অধীনে এবং ভারতীয় শাসক শ্রেণীর পূর্ণ সমর্থনে, ভারত চীনের বিরুদ্ধে মার্কিন যুদ্ধের প্রস্তুতিতে একটি যথার্থ ফ্রন্টলাইন রাষ্ট্রে রূপান্তরিত হয়েছে এবং দক্ষিণ এশিয়া, মধ্য ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া, আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য এমনকি দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল জুড়ে চীনকে মোকাবেলা করতে ওয়াশিংটনের সাথে কাজ করছে।”

দ্বিতীয় কারণটি ছিল ইজরায়েলের সাথে ভারতের সামরিক-কৌশলগত অংশীদারিত্ব এবং তৃতীয়টি মোদির বিজেপি এবং তার অতি-ডানপন্থী হিন্দুত্ববাদী মিত্রগুলি এবং ইহুদীদের মধ্যে রাজনৈতিক-মতাদর্শিক সখ্যতা … উভয়েই ধর্মীয় বর্জনবাদ এবং রাষ্ট্রীয় অপরাধ ও হিংস্রতা উদযাপন করে এবং মুসলমানদের তাদের সাধারণ শত্রু হিসাবে হেয় করে। (আরও পড়ুন: ভারতের অতি-ডানপন্থী সরকার গাজায় ইজরায়েলের গণহত্যামূলক হামলার সমর্থনে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির সাথে যোগ দিয়েছে)

জোন্স ব্যাখ্যা করেন যে যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য সামাজিক অসমতা এবং ব্যয় কঠোরতার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক শ্রমিক শ্রেণীর ক্রমবর্ধমান আন্দোলনকে সামরিকবাদ এবং সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতার সাথে যুক্ত করতে হবে: “আমাদেরকে তাদের দৈনন্দিন জীবনে শ্রমিকরা যা অনুভব করছে তার সাথে যুদ্ধ এবং ভারতীয় বুর্জোয়াদের বৈদেশিক নীতি এবং ভূ-রাজনৈতিক কৌশল এর মধ্যে সংযোগ স্থাপন করতে হবে।'

তিনি বলেন যে গাজার গণহত্যার বিরোধিতাকে অবশ্যই প্রতিক্রিয়াশীল ভারত-মার্কিন কৌশলগত অংশীদারিত্বের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সাথে যুক্ত করতে হবে।

সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধের বিরুদ্ধে শ্রমিক শ্রেণীকে সংগঠিত করার সংগ্রামের অর্থ সর্বদা আমলাতান্ত্রিক, পুঁজিবাদী ট্রেড ইউনিয়ন এবং ভারতের ভুয়ো বাম দলগুলির বিরুদ্ধে সংগ্রাম, যার সাথে তারা জোটবদ্ধ। 'এর মানে স্ট্যালিনবাদী কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়া-মার্কসবাদী (সিপিএম) এবং ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিআই) এবং তাদের বামফ্রন্টের ভূমিকা প্রকাশ করা।' জোন্স বলেন।

স্টালিনবাদীরা, যারা প্রথমে হামাস এর 'সন্ত্রাসবাদ' নিন্দা করার জন্য মোদি সরকারের সাথে যোগ দিয়েছিল, তারা বর্তমানে গাজা যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সংগঠিত করছে। কিন্তু তারা যে রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে অগ্রসর হচ্ছে তা সম্পূর্ণরূপে ভারতীয় রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে তাদের দশকের পর দশক ধরে দীর্ঘ ভূমিকার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ, ভারতীয় শ্রমিকদের দ্বারা স্বাধীন শ্রেণী আন্দোলনের যে কোনো পদক্ষেপের বিরোধিতা করা এবং মোদি সরকারের কাছে আবেদন জানানো।

তারা ইন্ডিয়া জোটকে তুলে ধরছে, বিরোধী কংগ্রেস পার্টির নেতৃত্বে একটি ডানপন্থী নির্বাচনী ব্লক, যার অভ্যন্তরীণ বা বিদেশী নীতিতে মোদী সরকারের সাথে কোন মৌলিক পার্থক্য নেই।

জোন্স উপসংহারে বলেন: “একটি যুদ্ধবিরোধী আন্দোলন অবশ্যই শ্রমিক শ্রেণীর মধ্যে প্রোথিত হতে হবে, . . . এবং একটি বিপ্লবী সমাজতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গির উপর ভিত্তি করে। এটি ঐতিহাসিকভাবে লিও ট্রটস্কির সাথে সম্পর্কিত দৃষ্টিভঙ্গি, যিনি ১৯১৭ সালের অক্টোবরে লেনিনের সাথে রাশিয়ান বিপ্লবের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এবং তারপরে স্ট্যালিনবাদী আমলাতন্ত্রের বিশ্বাসঘাতকতার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছিলেন এবং চতুর্থ আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।'

প্রশ্নোত্তর পর্বের সময়, একজন অংশগ্রহণকারী পুঁজিবাদী সরকার এবং নিয়োগকর্তাদের অংশীদার হিসাবে সমসাময়িক ট্রেড ইউনিয়নগুলির বৈশিষ্ট্য থাকা সত্ত্বেও ইজরায়েলে সামরিক সরবরাহ বন্ধ করার পদক্ষেপের জন্য প্যালেস্তীনি ট্রেড ইউনিয়নগুলির আহ্বানের ব্যাপারে ICFI-এর সমর্থনের বিষয়ে স্পষ্টীকরণ চেয়েছিলেন।

'আমরা প্যালেস্তীনি ট্রেড ইউনিয়নের আহ্বানকে স্বাগত জানাই,' জোন্স মন্তব্য করেছিলেন, 'যেহেতু এটি গণহত্যার বিরোধিতা করার জন্য বিশ্বজুড়ে শ্রমিক শ্রেণীকে একত্রিত করার প্রয়োজনীয়তার দিকে মনোযোগ দেয়। আমরা সেই আহ্বানটিকে জনপ্রিয় করার চেষ্টা করেছি, পাশাপাশি এটিকে আরও বিস্তৃত এবং বিকাশ করার চেষ্টা করেছি যে ইজরায়েলে অস্ত্রের চালান বন্ধ করার জন্য শ্রমিক শ্রেণীর স্বাধীন পদক্ষেপ অবশ্যই পুঁজিবাদী সরকারগুলির কাছে আবেদনের সাথে নয়, বরং লড়াইয়ের সাথে থাকতে হবে, শ্রমিক শ্রেণীর একটি বৃহত্তর সংহতি, এবং শেষ পর্যন্ত একটি সাধারণ ধর্মঘট।'

তিনি ICFI এর অবস্থান সম্পর্কে আরও বিশদভাবে বলেন: “আমরা ট্রেড ইউনিয়নগুলির বিরোধিতা করি কারণ তারা শ্রমিক শ্রেণীকে জাতীয়তাবাদী সংগঠন হিসেবে ব্যর্থ করেছে যারা পুঁজিবাদী ব্যবস্থার কাঠামো মেনে নেয়। তারা শ্রমিক শ্রেণীর পূর্ববর্তী বিজয়গুলোকেও রক্ষা করতে অক্ষম। কিন্তু এর মানে এই নয় যে কিছু কারণে যদি তারা পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয় আমরা তাদের বিরোধিতা করি। যখন একটি ট্রেড ইউনিয়ন ধর্মঘট ডাকে তখন কি আমরা তাদের বিরোধিতা করি? আমরা ধর্মঘটের বিরোধিতা করি না। পরিবর্তে আমরা শ্রমিক শ্রেণীর স্বার্থকে অগ্রসর করি। আমরা বলি শ্রমিকদের সংগ্রাম নিজেদের হাতে নিতে হবে এবং ইউনিয়নের আমলাতান্ত্রিক কৌশলে তাদের আস্থা রাখা উচিত নয়।”

একজন অংশগ্রহণকারী উল্লেখ করেন যে ভারতে ট্রেড ইউনিয়ন, তা সে সিপিএম-নেতৃত্বাধীন CITU, CPI-এর নেতৃত্বাধীন AITUC, বা অন্য কোনও ট্রেড ইউনিয়ন বা জোটই হোক না কেন, শ্রমিকদের তাদের বিপ্লবী ভূমিকা সম্পর্কে সচেতন হতে বাধা দেয় এবং তাদের এই বা সেই নিয়োগকারী ব্যক্তির সাথে অর্থনৈতিক সংগ্রামে সীমাবদ্ধ করে। তিনি জিজ্ঞাসা করেন কিভাবে এই চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে ওঠা যাবে।

জোন্স ব্যাখ্যা করেন যে শ্রমিক শ্রেণীর একটি বিপ্লবী শক্তিতে রূপান্তর হওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং জটিল প্রশ্ন।

তিনি ব্যাখ্যা করেন, পুঁজিবাদের গভীরতর সঙ্কট শ্রমিক শ্রেণীকে সংগ্রামে উদ্বুদ্ধ করছে, সমাজতন্ত্রের প্রতি বৃহত্তর গ্রহণযোগ্যতার শর্ত তৈরি করছে, যা শ্রমিকদের উদ্দেশ্যমূলক স্বার্থের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। যাইহোক, এটি একটি স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়া নয়। বিপ্লবী দলকে শ্রমিকশ্রেণীর মধ্যে সমাজতান্ত্রিক চেতনা আনার জন্য লড়াই করতে হবে। সেটাই আইসিএফআই-এর কাজ।

জোন্স জোর দিয়েছেন যে এই চ্যালেঞ্জটি ICFI এর কাজের কেন্দ্রবিন্দু। এই চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে ওঠার প্রচেষ্টার ভিত্তি অবশ্যই পূর্ববর্তী শ্রেণী সংগ্রামের পুঞ্জীভূত শিক্ষা এবং স্ট্যালিনবাদ, মাওবাদ এবং ছদ্ম-বামদের বিরুদ্ধে চতুর্থ আন্তর্জাতিকের যে সংগ্রাম তার মধ্যে হতে হবে।

বৈঠকের সমাপ্তিতে, জয়সেকেরা অংশগ্রহণকারীদের গাজায় ইজরায়েলের আক্রমণ এবং এর বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী আন্দোলন এর উপর WSWS-এর ব্যাপক বিশ্লেষণ এবং ভারতের বিষয়েও তা পড়ার আহ্বান জানান। ট্রটস্কিবাদের শতবার্ষিকী উপলক্ষে মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ে ডেভিড নর্থের দেওয়া সাম্প্রতিক বক্তৃতাটি অধ্যয়ন করতে তিনি বিশেষভাবে তাদের উৎসাহিত করেন।

'গাজা যুদ্ধ বন্ধ করার একমাত্র উপায় হল শ্রমিক শ্রেণীর একটি পুঁজিবাদবিরোধী, বিশ্বব্যাপী যুদ্ধবিরোধী সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন গড়ে তোলা,' তিনি উপসংহারে বলেন। “এর জন্য আমাদের সচেতনভাবে এবং পদ্ধতিগতভাবে শ্রমিক শ্রেণীর মধ্যে রাজনৈতিক ও তাত্ত্বিকভাবে প্রচার গড়ে তুলতে হবে। এর জন্য কমরেড আপনাদের সমর্থন আমাদের প্রয়োজন। শ্রমিক শ্রেণীর বিপ্লবী নেতৃত্ব গড়ে তুলতে ভারতে ICFI-এর একটি শাখা গড়ে তুলতে আমাদের সাথে যোগ দিন।”

Loading