বাংলা

শ্রীলঙ্কার শ্রমিক শ্রেণী কিভাবে আইএমএফের ব্যয় কঠোরতার বিরুদ্ধে অবশ্যই লড়াই করবে এবং গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা করবে

শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি রনিল বিক্রমাসিংহে ৩রা এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের একটি বৈঠকে বলেছেন যে তিনি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের ঋণ চুক্তিটি আলোচনার জন্য সংসদে উপস্থাপন করবেন এবং এটি অনুমোদনের জন্য ভোট করাবেন। 'এটি অনুসরণ করে, চুক্তির মূল বিষয়গুলি আইনে প্রণীত হবে,' বলে তিনি ঘোষণা করেছেন।

সেই সাথে বিক্রমাসিংহে ঘোষণা করেছেন যে নতুন সন্ত্রাসবিরোধী বিল (এটিবি) একই সময়ে সংসদে পেশ করা হবে। কঠোর পদক্ষেপটি রাষ্ট্রপতিকে আইএমএফ এর কর্মসূচি সহ তার সরকারের নীতির সমস্ত জনপ্রিয় বিরোধিতাকে দমন করার জন্য পুলিশি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দেয়।

ঘোষণা করার পর এখন পর্যন্ত উভয় নীতিই ২৫শে এপ্রিল সংসদে পেশ করার কথা রয়েছে।

রাষ্ট্রপতি রনিল বিক্রমাসিংহে ৪ই ফেব্রুয়ারি কলম্বোতে ৭৫ তম স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন, সশস্ত্র বাহিনীর প্রধানদের সাথে। [Photo: Sri Lanka president’s media division]

সোশ্যালিস্ট ইকুয়ালিটি পার্টি (এসইপি) সতর্ক করে যে বিক্রমাসিংহের আইএমএফ প্রোগ্রামকে দেশের আইনে লিখিত করার পরিকল্পনা শ্রমিক শ্রেণী এবং দরিদ্রদের বিরুদ্ধে একটি ভয়ঙ্কর হুমকি, যা এর কঠোর পদক্ষেপের বিরুদ্ধে যে কোনও পদক্ষেপকে অবৈধ ঘোষণা করে। বিক্রমাসিংহের পদক্ষেপ, তার ATB আরোপ সহ, রাষ্ট্রপতির একনায়কতন্ত্রের প্রবেশের দিকে আরেকটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ।

এইসব স্পষ্ট গণতন্ত্রবিরোধী কর্মকাণ্ডকে পরাস্ত করতে এবং বিক্রমাসিংহের শাসনের পতন ঘটাতে শ্রমিক শ্রেণীর জন্য তার স্বাধীন শিল্প শক্তিকে একত্রিত করা জরুরি। এটি শুধুমাত্র শ্রমিক এবং গ্রামীণ মেহনতিদের স্বাধীন অ্যাকশন কমিটির ভিত্তিতে শ্রমিক এবং গ্রামীণ জনগণের একটি গণতান্ত্রিক এবং সমাজতান্ত্রিক কংগ্রেস গড়ে তোলার মাধ্যমে করা যেতে পারে।

প্রেসিডেন্টের গণতন্ত্রবিরোধী পদক্ষেপের পেছনে আন্তর্জাতিক অর্থ পুঁজি রয়েছে। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের দীর্ঘস্থায়ী দালাল, বিক্রমাসিংহকে গত বছরের গণ-অভ্যুত্থানের পরে তার পূর্বসূরি গোটাভায়া রাজাপাক্ষের অপমানজনক পতনের পরে রাষ্ট্রপতি হিসাবে স্থাপন করা হয়েছে।

শ্রীলঙ্কার জন্য IMF এর এই মিশনের প্রধান, পিটার ব্রুয়ার, যিনি পূর্বে IMF কর্মসূচিটিকে 'নিষ্ঠুর পরীক্ষা' হিসাবে বর্ণনা করেছিলেন, বিক্রমাসিংহের বিবৃতিকে অনুসরন করে ৯ই এপ্রিল এই অনুভূতির পুনরাবৃত্তি করেছিলেন।

'আইএমএফ সাহায্য করার জন্য এখানে আছে,' ব্রুয়ার ঘোষণা করেছিলেন, কিন্তু 'কোনও সহজ সমাধান নেই... এই বিশাল সমস্যাটি মোকাবেলায় সবাইকে একত্রিত হতে হবে। সংস্কার থেকে কঠিনভাবে অর্জিত লাভ জনগণের উপকারে আসে এবং সংকটের পুনরাবৃত্তি না ঘটে তা নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ।'

কলম্বো ইতিমধ্যেই প্রাথমিকভাবে আইএমএফ এর দাবিগুলিকে বাস্তবায়ন করেছে—টাকার তীব্র অবমূল্যায়ন, আমদানি হ্রাস এবং মূল্য সংযোজন কর, বিদ্যুতের শুল্ক এবং আয়কর বৃদ্ধি—আগামীতে অন্যান্য সরকারী আক্রমণের আমন্ত্রন সহ। এর মধ্যে রয়েছে বেসরকারীকরণ, কল্যাণমূলক কাজে ভর্তুকি কাটছাঁট, লাখ লাখ চাকরি কমানোর জন্য সরকারি খাতের পুনর্গঠন এবং রাজস্ব ঘাটতি দূর করার জন্য অন্যান্য ব্যবস্থা। এই সমস্ত পদক্ষেপগুলির লক্ষ্য শ্রীলঙ্কার শ্রমিক এবং মেহনতিদেরকে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে বাধ্য করা।

এই উদ্ঘটিত পদক্ষেপ এবং শ্রমিক শ্রেণীর বিরুদ্ধে বিপজ্জনক হুমকির মধ্যে, ১০০ টি ট্রেড ইউনিয়নের নেতারা ১০ই এপ্রিল কলম্বোতে মিলিত হয়েছিল, ধারণা করা হচ্ছে যে তা ছিল ATB এবং সরকারের খরচ কমানোর আক্রমণের প্রতি তাদের প্রতিক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করতে। সভাটি একটি নরম বিবৃতি দিয়ে শেষ হয়, এই সংকেত দেয় যে ইউনিয়নগুলি এই সরকারী হুমকিকে পরাস্ত করতে কিছুই করবে না।

অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে জনতা বিমুক্তি পেরামুনা (জেভিপি)-নিয়ন্ত্রিত ন্যাশনাল ট্রেড ইউনিয়ন সেন্টার এবং সিলন শিক্ষক ইউনিয়ন, গভর্নমেন্ট মেডিকেল অফিসার অ্যাসোসিয়েশন (জিএমওএ), শ্রীলঙ্কা মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (এসএলএমএ), ফেডারেশন অফ ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন (এফইউটিএ), স্বাস্থ্য বিষয়ক ট্রেড ইউনিয়ন, ছদ্ম-বাম ফ্রন্টলাইন সোশ্যালিস্ট পার্টি (এফএসপি) এবং পাবলোইট ইউনাইটেড সোশ্যালিস্ট পার্টির শ্রমিক সংগ্রাম কেন্দ্র। বেশ কয়েকটি সুশীল সমাজের দল এবং জেলেদের সংগঠনগুলিও অংশ নেয়।

যদিও রক্ষণশীল পেশাজীবীদের ইউনিয়ন—FUTA, GMOA এবং SLMA—ইতিমধ্যে IMF-এর সঙ্গে উচ্চ-স্তরের আলোচনা করেছে, পূর্বে উল্লিখিত অন্যান্য সমস্ত ইউনিয়ন, প্রকাশ্যে বা গোপনে, IMF-এর ব্যয় কঠোরতা ব্যবস্থাকে সমর্থন করে৷

১০ই এপ্রিলের সভায় একটি বিবৃতি জারি করে সরকারকে তার স্বেচ্ছাচারী আয়কর ব্যবস্থা প্রত্যাহার করার, জাতীয় সম্পদ বিক্রি বন্ধ এবং জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাবার কারণে ত্রাণ প্রদানের আহ্বান জানানো হয়।

ইউনিয়নের আমলারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে 'অদম্য প্রচেষ্টা এবং নিরলস সাহসের সাথে এক হয়ে কাজ করার জন্য, সমস্ত পদক্ষেপকে সম্পূর্ণরূপে সফল করতে, সমস্ত শ্রীলঙ্কার নাগরিকদের সাথে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য, [এবং] আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে স্বাধীন করার জন্য দৃঢ়ভাবে কাজ করতে হবে যাকে ক্ষমতাসীনরা সংকটের মধ্যে টেনে নিয়ে গেছে, এবং তার জন্য সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে নিজেদের উৎসর্গ করতে হবে।”

এই জাতীয়তাবাদী বক্তৃতা ভুক্তভোগী জনসাধারণকে প্রতারিত করার লক্ষ্যে। ইউনিয়নগুলি কোনো পদক্ষেপের প্রস্তাব দেয়নি- ধর্মঘট, বিক্ষোভ বা প্রতিবাদের- এবং আবারও এই কল্পকাহিনী প্রচার করে যে সরকারকে ছাড় দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া যেতে পারে।

বৈঠকের সময়, SLMA সভাপতি অধ্যাপক ইন্দিকা করুণারত্নে IMF তহবিলের 'যৌক্তিক ব্যবহারের' আহ্বান জানান। FUTA-এর পক্ষে কথা বলতে গিয়ে, অধ্যাপক অরুণা শান্তারাচ্চি সিঙ্গাপুরের টেমাসেক এবং মালয়েশিয়ার খাজানাকে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কর্পোরেশনের মডেল হিসাবে প্রশংসা করেছেন। এই সরকারী মালিকানাধীন, তথাকথিত সার্বভৌম সম্পদ তহবিল, বেসরকারীকরণের আরেকটি রূপ।

NTUC নেতা Wasantha Smarasinghe মিথ্যাভাবে দাবি করেছেন যে সরকার 'পিছু হটতে' বাধ্য হয়েছিল এবং ইউনিয়নগুলি এর বিরোধিতা করার পরে এটিবিকে সংসদে উপস্থাপন করার আগের তারিখ পিছিয়েছিল। এই দাবিটি উন্মোচিত হয়ে যায় যখন বিক্রমাসিংহে পরবর্তী সময়ে এপ্রিলের শেষে বিলটি উত্থাপন করার ঘোষণা করেন।

শ্রমিক সংগ্রাম কেন্দ্রের নেতা ডুমিন্ডা নাগামুওয়া বৈঠকে বলেছিলেন যে ছাড় পাওয়ার জন্য 'সরকারকে চাপ দিতে সংসদের বাইরে একটি শক্তি তৈরি করা উচিত'। সিঙ্গাপুর- বা মালয়েশিয়া-শৈলীর বেসরকারীকরণের প্রস্তাব নিয়ে তার কোনো সমস্যা ছিল না বা আইএমএফ তহবিলের 'যুক্তিযুক্ত' ব্যবহারের জন্য যারা বৈঠকে আহ্বান জানিয়েছিল তাদের সমালোচনা ছিল না।

ইউনিয়নগুলির প্রতিক্রিয়া ১লা এবং ১৫ই মার্চ ব্যাপক ধর্মঘট এবং বিক্ষোভের পরে। ট্রেড ইউনিয়নগুলির এই কর্মসূচিগুলিকে সীমিত করার প্রচেষ্টা সত্ত্বেও প্রায় পাঁচ লক্ষ শ্রমিক উভয় দিনই অংশগ্রহণ করেছিল। শ্রমিকরা স্পষ্ট করেছে যে তারা লড়াই করার জন্য প্রস্তুত কিন্তু ইউনিয়ন আমলারা, বিক্রমাসিংহের শাসনাতন্ত্র এবং সমগ্র শাসক শ্রেণীর মতো, শ্রমিক-শ্রেণীর সংগ্রামের নতুন তরঙ্গকে ভয় করে।

এই সমস্ত ইউনিয়নগুলি, ভুয়া বাম গোষ্ঠীগুলির সমর্থনে, গত বছরের দেশব্যাপী বিক্ষোভ এবং ২৮শে এপ্রিল এবং ৬ই মে সাধারণ ধর্মঘটের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল, এই গণআন্দোলনটিকে JVP এবং সামগী জনা বালাওয়েগয়া (SJB) রাষ্ট্রপতি রাজাপাক্ষের অধীনে একটি অন্তর্বর্তী পুঁজিবাদী সরকারের আহ্বানে সমর্থন করে।

গত মাসে সিলন পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (সিপিসি) কর্মচারীরা ২৮শে মার্চ ধর্মঘট করলে এই ইউনিয়নগুলির বিশ্বাসঘাতক ভূমিকা আবারও প্রদর্শিত হয়।ধর্মঘট ভাঙতে সরকার হাজার হাজার সেনা ও পুলিশ মোতায়েন করে, কর্মচারীদের কাজ চালিয়ে যেতে বাধ্য করে। অত্যাবশ্যকীয় পাবলিক সার্ভিসেস আইন ব্যবহার করে, বিদ্যুৎমন্ত্রী ২০ জন ইউনিয়ন নেতাকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে যেতে বাধ্য করেন এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

ক্ষমতাসীন শ্রীলঙ্কা পোডুজানা পেরামুনা, এসজেবি, জেভিপি এবং শ্রীলঙ্কা ফ্রিডম পার্টি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত সিপিসি ইউনিয়ন সহ ইউনিয়নের আমলারা সকলেই IMF ব্যয় হ্রাসের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং এই নিপীড়নের 'নিন্দা' করে একটি খালি বিবৃতি দিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন৷

কাজের জায়গা থেকে সামরিক ও পুলিশ বাহিনী অপসারণ, অপরিহার্য পরিষেবা আইন প্রত্যাহার এবং ইউনিয়ন নেতাদের উপর চাপিয়ে দেওয়া বাধ্যতামূলক ছুটির আদেশ, বা সিপিসি কর্মচারীদের রক্ষা করার জন্য শ্রমিকদের কোনও রকমের আন্দোলন করার কোনও আহ্বান ছিল না।

ট্রেড ইউনিয়নগুলির বিশ্বাসঘাতক ভূমিকা আবারও নিশ্চিত করে যে শ্রমিকশ্রেণী কেবলমাত্র ব্যয় কঠোরতার বিরুদ্ধে সংগ্রামকে এগিয়ে নিতে পারে এবং তাদের সামাজিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা করতে পারে ক্ষমতাকে নিজের হাতে নেবার মধ্য দিয়ে। এর জন্য প্রয়োজন প্রতিটি কর্মক্ষেত্রে, চা বাগানে এবং আশেপাশের এলাকাতে ইউনিয়ন এবং বুর্জোয়া দলগুলি ও তাদের ছদ্ম-বাম সমর্থনকারীদের থেকে স্বাধীন অ্যাকশন কমিটি গঠন করা।

বিক্রমাসিংহে স্পষ্ট করেছেন যে তিনি আইএমএফ চুক্তিতে সংসদীয় ভোট করতে চান তার কারণ সরকারের পিছনে বিরোধী এমপিদের জড়ো করতে।

পুঁজিবাদী ব্যবস্থার মধ্যে শ্রীলঙ্কার অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক অস্থিরতার কোন সংস্কারবাদী সমাধান নেই। এটি বৈশ্বিক পুঁজিবাদের ঐতিহাসিক সংকটের অংশ।

কোভিড-১৯ এবং ইউক্রেনে রাশিয়ার বিরুদ্ধে মার্কিন ন্যাটো যুদ্ধ বেড়ে চলা মুদ্রাস্ফিতিকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে, যা এখন শ্রীলঙ্কায় প্রায় ৫০ শতাংশের কাছাকাছি। ২০২২ সালে, ৫,০০,০০০ শ্রমিক তাদের চাকরি হারিয়েছে। দারিদ্র্য ২০১৯ সালে ১৩.১ শতাংশ থেকে দ্বিগুণ হয়ে ২০২২ সালে ২৫.৬ শতাংশে উন্নীত হয়েছে, যার কারণে আরও ২৭ লক্ষ মানুষকে দুঃখের মধ্যে ফেলেছে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির সর্বশেষ সমীক্ষা অনুসারে শ্রীলঙ্কার ৩২ শতাংশ পরিবারের 'খাদ্য সংকট' অর্থাৎ তারা ক্ষুধার্ত বা ক্ষুধার্ জ্বালায় মৃত্যুমুখী।

বিক্রমাসিংহের শাসনতন্ত্রের স্বৈরাচারী পদক্ষেপ এবং IMF-এর নৃশংস দাবির বিরুদ্ধে, সোশ্যালিস্ট ইকুয়ালিটি পার্টি (SEP) তাদের অ্যাকশন কমিটির মাধ্যমে শ্রমিক এবং গ্রামীণ দরিদ্রদের পক্ষে লড়াই করার জন্য একাধিক পদক্ষেপ নেবার আহ্বান জানিয়েছে।

গণতান্ত্রিক অধিকারের লড়াইকে এগিয়ে নিতে, এসইপি কার্যনির্বাহী প্রেসিডেন্সি বাতিলের আহ্বান জানিয়েছে। ATB কে না! জরুরী, অত্যাবশ্যকীয় সেবা এবং সন্ত্রাসবিরোধী আইন সহ সকল দমনমূলক আইন বাতিল করা! সব রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি!

এই সংগ্রাম পুঁজিবাদী দুর্দশার অবসানের লড়াইয়ের সাথে আবদ্ধ। এসইপি শ্রমিক শ্রেণীকে প্রয়োজনীয় পণ্যের উৎপাদন ও বন্টন নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেবার ডাক দেয়। এটি ব্যাংক, বড় কর্পোরেশন এবং চা বাগানগুলিকে জাতীয়করণ করে গণতান্ত্রিকভাবে জনসাধারণের নিয়ন্ত্রণে করা যেতে পারে। বিলিয়নেয়ার এবং কর্পোরেশনের বিপুল সম্পদকে অবশ্যই বাজেয়াপ্ত করতে হবে, এবং সমস্ত বিদেশী ঋণ প্রত্যাখ্যান করতে হবে।

এই কর্মসূচির জন্য লড়াই করতে, শ্রমিকদের অ্যাকশান কমিটি দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের উপর ভিত্তি করে শ্রমিক এবং গ্রামীণ জনগণের একটি গণতান্ত্রিক এবং সমাজতান্ত্রিক কংগ্রেস গড়ে তুলতে হবে। এটি সমাজতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য শ্রমিক ও কৃষকদের সরকার গড়ার জন্য লড়াইয়ের পথ প্রশস্ত করবে। এই সংগ্রামে, সিংহল উগ্র জাতীয়তাবাদ বা তামিল সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে সমস্ত জাতিগত পথ ছাড়িয়ে শ্রমিক শ্রেণীর ঐক্য গড়ে তুলতে হবে, যা শ্রমিক শ্রেণীকে বিভক্ত ও দুর্বল করার জন্য পুঁজিবাদী শ্রেণীর একটি অস্ত্র।

শ্রীলঙ্কায় শ্রেণী সংগ্রাম আন্তর্জাতিক শ্রমিক শ্রেণীর ক্রমবর্ধমান উত্থানের অংশ এবং যা প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রণের পেনশন কাটছাঁটের বিরুদ্ধে লক্ষ লক্ষ ফরাসি শ্রমিকের গণবিক্ষোভ ও ধর্মঘটের মধ্যে দেখা যায়। শ্রমজীবী জনগণের উপর পুঁজিবাদী সংকটের বোঝা চাপানোর সরকারি প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে ইউরোপ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত জুড়ে শ্রমিকদের সংগ্রাম গড়ে উঠছে।

শ্রীলঙ্কার শ্রমিকরা আন্তর্জাতিকভাবে তাদের শ্রেণী ভাই-বোনদের সাথে তাদের সংগ্রামকে একত্রিত করতে পারে তাদের অ্যাকশন কমিটিগুলোকে ইন্টারন্যাশনাল ওয়ার্কার্স অ্যালায়েন্স এর সাধারণ স্তরের গোষ্ঠী (র‍্যাঙ্ক-এন্ড-ফাইল কমিটি)গুলির সাথে সমন্বয় করে, যেটি চতুর্থ আন্তর্জাতিকের আন্তর্জাতিক কমিটি দ্বারা সূচিত হয়েছে।

আমরা এই কর্মসূচির পক্ষে লড়াই করার জন্য শ্রমিক ও যুবকদের এসইপিতে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানাই।

Loading