বাংলা
Perspective

ভারতে ট্রেনের ভয়াবহতা: ক্ষয়িষ্ণু পুঁজিবাদের আরেকটি অপরাধ

সিকি শতাব্দীর কিছু বেশি সময়ের মধ্যে ভারতে সবচেয়ে মারাত্মক ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রায় ৩০০ যাত্রী নিহত এবং ১,০০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছে। এটি একটি দূঃখজনক ঘটনা যা বিশ্বকে আতঙ্কিত করেছে এবং যা হিন্দু উগ্রবাদী নরেন্দ্র মোদির অতি-ডান পন্থী শাসন এবং এর পূর্ববর্তী পুঁজিবাদী সরকারগুলির দ্বারা মৌলিক পরিকাঠামোর প্রতি অপরাধমূলক অবহেলাকে প্রকাশ করেছে।

উদ্ধারকারীরা পূর্ব ভারতের উড়িষ্যা রাজ্যের বালাসোর জেলায় লাইনচ্যুত যাত্রীবাহী ট্রেন থেকে একজন যাত্রীর দেহ সরানোর চেষ্টা করছে। 3 জুন, 2023, শনিবার, [AP Photo/Rafiq Maqbool]

গত শুক্রবার রাতে পূর্ব ভারতের ওড়িশা রাজ্যের বালাসোর জেলায় তিনটি ট্রেনের সংঘর্ষ হয়, এর মধ্যে দুটি উচ্চ গতির যাত্রীবাহী ট্রেন একে অপরের বিপরীত দিকে চলেছিল, তৃতীয়টি লোহা আকরিক বোঝাই একটি মালবাহী ট্রেন। বালাসোরের বাহানাগা বাজার স্টেশনটি একটি চার লাইনের স্টেশন, যার মাঝখানে দুটি প্রধান লাইন এবং উভয় পাশে দুটি লুপ লাইন রয়েছে। শালিমার-চেন্নাই সেন্ট্রাল করোমন্ডেল এক্সপ্রেস পূর্ব ভারতের হাওড়ার কাছে শালিমার ষ্টেশন থেকে দক্ষিণ ভারতের চেন্নাই যাচ্ছিল প্রধান লাইন দিয়ে প্রতি ঘণ্টায় ১২৮ কিলোমিটার বেগে এবং বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস যেটি বেঙ্গালুরু থেকে আসছিল অন্য একটি প্রধান লাইন ধরে ১২৬ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা বেগে যাচ্ছিল।

রেলওয়ের একজন কর্মকর্তার মতে, দক্ষিণগামী করোমন্ডল এক্সপ্রেসটি প্রধান লাইন থেকে সাইড থাকা লুপ লাইনে চলে যায়, যখন 'সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা লৌহ আকরিক ভর্তি একটি পণ্য ট্রেনের সাথে ধাক্কায় বিধ্বস্ত হয়' যা 'খুব ভারী হওয়ায় দুর্ঘটনার সমস্ত ধাক্কা শুষে নেয়।' অন্য একজন কর্মকর্তা বলেছেন যে যাত্রীবাহী ট্রেনের ২২টি বগির মধ্যে ১২টি সংঘর্ষের ফলে লাইনচ্যুত হয়েছিল এবং কয়েকটি হাওড়াগামী সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসের পথে ছিটকে তার লাইনের মধ্যে গিয়ে পড়েছিল।

কেন দক্ষিণগামী ট্রেনটি দিক পরিবর্তন করেছে তা এখনও জানা যায়নি, তবে দুর্ঘটনাটিকে একটি ভুল সংকেত বা সিগন্যালিং ডিভাইসের ত্রুটির কারণে দায়ী করা হচ্ছে। কোনও তদন্তের আগেই, মোদি সরকার প্রাথমিক প্রতিবেদনগুলি ধরে নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ের রেলপথের শ্রমিকবাহিনীর উপর দায়বদ্ধতা চাপিয়ে দিয়েছে যাতে করে তার নিজস্ব নীতিগুলি কীভাবে বিপর্যয়ের জন্য অবদান রেখেছে তা থেকে মনোযোগ সরানো যায়।

বিপুল প্রাণহানির জন্য কুমিরের কান্না ঝরিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দুর্ঘটনার জন্য তার 'দুঃখ' প্রকাশ করতে ছুটে আসেন। 'যেই ভুল করেছে, তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে,' তিনি ঘোষণা করেছিলেন, এই ভাবে স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে ধারাবাহিক সরকারগুলির কয়েক দশকের অবহেলা ঢাকতে বলির ছাগল খুঁজে পাওয়া যাবে এবং শাস্তি দেওয়া হবে।

বাস্তবে, ভারতীয় শাসক শ্রেণী, এবং তাদের বর্তমান প্রতিনিধি হিসাবে মোদি, সংঘর্ষে পিষে যাওয়া এবং ছিন্নভিন্ন যাত্রীদের জন্য কোন পরোয়া করেন না। বেশিরভাগই পশ্চিমবঙ্গ, বিহার এবং ঝাড়খণ্ড রাজ্যের অভিবাসী শ্রমিক যারা চেন্নাই এবং কাছাকাছি এলাকায় কাজ করেন। অন্যরা দক্ষিণ ভারতের বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে যাওয়া রুগী ছিল।

মিডিয়া রিপোর্টে দেখানো হয়েছে, দুর্ঘটনাটি টুকরো টুকরো লাশে ভরা একটি নারকীয় দৃশ্য তৈরি করেছে। লোহা কাটার যন্ত্র ব্যবহার করা, দরজা এবং জানালা ভেঙ্গে উদ্ধারকারীদের ধ্বংসপ্রাপ্ত ট্রেনের ভেতরে ও উপরে উঠতে দেখা যায়, স্থানীয় বাসিন্দারা রেল গাড়িতে আটকে পড়া শত শত লোককে মুক্ত করার চেষ্টা করেছে।

করোমন্ডেল এক্সপ্রেস থেকে বেঁচে যাওয়া একজন রমেশ, এবিপি নাড়ুকে বলেছেন: “যখন দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল, তখন পুরো ট্রেনটি নড়ে ওঠে এবং আমরা সবাই নিচে পড়ে যাই। আমরা কিছুই করে উঠতে পারিনি। আমরা যখন কোচ থেকে বের হয়ে আসি, তখন একাধিক কোচ লাইনচ্যুত এবং একটি কোচের সাথে অন্য একটি কোচের ধাক্কা দেখে হতবাক হয়ে যাই।”

সেই ভয়ঙ্কর দৃশ্যের কথা স্মরণ করে রমেশ বলেন, ট্রেনের ছিন্নভিন্ন দেহাবশেষ নিয়ে অনেকেই আটকা পড়েছিলেন। গ্রামবাসীরা সঙ্গে সঙ্গে সাহায্যের জন্য ছুটে এসে লোকজনকে উদ্ধার করতে শুরু করে। একপর্যায়ে পুলিশ ও চিকিৎসকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।

মোদির রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব রবিবার বলেছেন যে দুর্ঘটনার কারণ ছিল 'ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিংয়ে পরিবর্তন' যা সংঘর্ষ এড়াতে ব্যবহৃত হয় এবং তদন্তটি দেখাবে 'কে সেই ভুলের জন্য দায়ী।' কিন্তু ভারতীয় রেল নেটওয়ার্কে মৃত্যুর পরিসংখ্যান দেখায় যে কোনও 'ভুল' বা 'দুর্ঘটনা' নেই, তবে দায়বদ্ধতা পরবর্তী সরকারের ওপর বর্তায়৷

ভয়াবহ সংখ্যা সত্ত্বেও, শুক্রবারের দুর্ঘটনাটি উত্তর ভারতের উত্তর প্রদেশের ফিরোজাবাদের কাছে পুরুষোত্তম এক্সপ্রেস এবং কালিন্দি এক্সপ্রেসের মধ্যে সংঘর্ষে ৩৫৮ জন নিহত হওয়া ১৯৯৫ সালের একটি দুর্ঘটনা সহ আরও তিনটি ট্রেন বিপর্যয়কে অতিক্রম করে।

এর চেয়েও খারাপ হল প্রতিদিন হয়ে চলা মৃত্যু ট্রেন থেকে ছুঁড়ে ফেলার কারণে—অধিকাংশ জনাকীর্ণ যাত্রীবাহী গাড়ির ছাদে চড়ে যাওয়ায়—এবং দ্রুতগামী ট্রেনের ধাক্কায় ট্র্যাকের ওপরে মানুষ মারা যাওয়ায়৷ সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২১ সালে ভারতীয় রেল ব্যবস্থায় ১৯,০০০টি দুর্ঘটনায় ১৬,০০০ জন মারা গেছে। প্রতিদিন গড়ে ৪৯টি দুর্ঘটনা, ৪৫ জনের মারা যাওয়া।

সরকারী অবহেলার প্রতি ক্রমবর্ধমান ক্ষোভকে শান্ত করার প্রয়াসে, মোদী প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় ত্রাণ তহবিল (PMNRF) থেকে মৃতের নিকটাত্মীয়দের জন্য ২,০০,০০০ টাকা ($2,427) এবং আহতদের ৫০,০০০ টাকা দেবার কথা ঘোষণা করেন। এটি বালতিতে এক বিন্দু মাত্র সেই সরকারের কাছে যারা বর্তমানে সামরিক খাতে ৬.৩৩ ট্রিলিয়ন (৬৩৩০০০০০,০০,০০০)টাকা ($76.8 বিলিয়ন) ব্যয় করে - বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম যুদ্ধ বাজেট, শুধুমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের পরে।

যদিও মোদি সরকার এবং রাজ্য কর্তৃপক্ষ এখন নিজেদের দায়িত্ব ঢাকতে মরিয়া চেষ্টা করছে, এটা স্পষ্ট যে কয়েক দশক ধরে অবহেলা এবং খরচ কমানোর ফলে রেলের পরিকাঠামো এবং প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার মারাত্মক ক্ষয় ঘটেছে।

শুক্রবারের দুর্ঘটনার ঠিক দুদিন আগে ৩১ মে হিন্দু পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন, যার শিরোনাম ছিল, 'ট্রেন দুর্ঘটনার বৃদ্ধি ভারতীয় রেলকে উদ্বিগ্ন করে', তাতে বলছে:

“রেলওয়ে বোর্ড সম্প্রতি লোকো পাইলটদের [লোকোমোটিভ ইঞ্জিনিয়ারদের] তাদের নির্ধারিত কাজের সময় মোতায়েন করার বিষয়টি দেখছিল, যাতে দেখা যায় অতিরিক্ত কাজের সময় বাড়ানোর ফলে ট্রেন চলাচলের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে। নিয়ম অনুসারে, ক্রুদের ডিউটির সময় কোনও পরিস্থিতিতে ১২ ঘন্টার বেশি হতে পারে না, নিজের নাম জানাতে অনিচ্ছুক এমন এক আধিকারিক বলেছেন... রেল নেটওয়ার্ক জুড়ে ট্রেন দুর্ঘটনা বৃদ্ধির জন্য উদ্বিগ্ন, রেলওয়ে বোর্ড শূন্যপদ পূরণের জন্য জরুরি পদক্ষেপ এবং লোকোমোটিভ পাইলটদের দীর্ঘ কর্মঘণ্টা কমানোর ডাক দিয়েছে।

'মানবীয় ত্রুটি' এবং 'সংকেত ব্যর্থতা' প্রতিরোধ করার জন্য উন্নত প্রযুক্তি উপলব্ধ কিন্তু ব্যাপকভাবে তা প্রয়োগ করা হয়নি। রেলের আধিকারিকরা স্বীকার করেছেন যে শুক্রবার যেই রুটে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে সেখানে ট্রেনের সংঘর্ষ বিরোধী ব্যবস্থা 'কবচ' উপলব্ধ ছিল না।

যাই হোক না কেন, অনেক দেশের রেলকর্মীদের অভিজ্ঞতা হল যে এমনকি যখন সবচেয়ে আধুনিক প্রযুক্তি চালু করা হয়, তখনও এটি রেলপথ পরিচালনাকে নিরাপদ করার জন্য ব্যবহার করা হয় না, বরং রেলের কর্তাদের এবং তাদের আর্থিক সহায়তাকারীদের মুনাফা বাড়াতে ব্যবহৃত হয়। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডা উভয় দেশেই প্রিসিশন রেল শিডিউলিং (PSR) এর উদ্দেশ্য ছিল, শ্রমিকদের কাজের জন্য 24/7 প্রস্তুত থাকা, শিল্পের মর্যাদা দেবার সাথে রেলপথ শ্রমিকদের সংখ্যা কমাতে ব্যবহৃত হয়েছে।

দেশের রেল ব্যবস্থায় গণহত্যার প্রতি মোদী সরকারের মনোভাব একই রকমভাবে কোভিড-১৯ মহামারীর সময়ে দরিদ্র শ্রমজীবী মানুষের জীবনের প্রতি নিষ্ঠুর উদাসীনতাকেই স্পষ্ট প্রতিফলিত করে। প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বাস্তবায়নে ব্যর্থতার জন্য দায়ী ব্যবসায়ী পন্থী শাসনের অপরাধমূলক নীতি যার জন্য লক্ষ লক্ষ মানুষকে মারা যেতে দেওয়া হয়েছিল।

সারা বিশ্বে, সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধের দিকে উন্মত্ত চালনা এবং শাসক গোষ্ঠীর মুনাফালোভী চরিত্র পরিকাঠামো নির্মাণ এবং রক্ষণাবেক্ষণকে ব্যাপক অবহেলার দিকে পরিচালিত করেছে। এটি গ্রীসের টেম্পিতে ঘটা রেল দুর্ঘটনার মতো বিপর্যয়গুলিতে প্রতিফলিত হয়, যেখানে ৫৭ জন নিহত হয়েছিল, বেশিরভাগই ছাত্র যারা তাদের ছুটি থেকে ফিরছিল এবং পূর্ব প্যালেস্টাইন, ওহাইওতে একটি নরফোক সাউদার্ন ট্রেন লাইনচ্যুত হয়েছিল, যা ছোট শহর- এর বাতাস, জল এবং মাটিকে বিষাক্ত করেছিল— ট্রেনের ট্যাঙ্ক করে রাসায়নিক দ্রব্য নিয়ে যাবার পথে।

ভারতে, যেখানে রেলপথগুলি রাষ্ট্রের মালিকানাধীন, সেখানেও একই প্রক্রিয়া চলছে৷ মোদি সরকার, পাবলিক পরিষেবাগুলি উপেক্ষা করে, যেগুলি লক্ষ লক্ষ শ্রমিক এবং গ্রামীণ দরিদ্রদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ - এটি বিস্ময়কর ৮.৪ বিলিয়ন মানুষ প্রতি বছর রেলপথ যাত্রী ব্যবস্থা ব্যবহার করে – অথচ অত্যন্ত অত্যাধুনিক ড্রোন, যুদ্ধবিমান, ট্যাঙ্ক সহ সামরিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং পারমাণবিক অস্ত্রের জন্য প্রচুর ব্যয় করছে, কারণ এটি চীনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ অভিযানে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের পিছনে লাইন লাগিয়েছে।

ভারতের সমস্ত প্রধান বুর্জোয়া দল সামরিকবাদের এই কর্মসূচির জন্য এবং নিজের ঘরে শ্রমিক শ্রেণীর বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য দায়িত্ব ভাগ করে নেয়। কংগ্রেস পার্টি, এখন বিরোধী দল, ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার পর থেকে অর্ধেকেরও বেশি সময় ধরে দেশ শাসন করেছে এবং একইভাবে ভারতের রেলওয়ে নেটওয়ার্কের মৌলিক নিরাপত্তাকে উপেক্ষা করেছে।

স্টালিনবাদী কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়া (মার্কসবাদী) বা সিপিএম, রেল নিরাপত্তার অবহেলার বিষয়ে মৃদু সমালোচনা করেছে, কিন্তু এটি তিন দশক ধরে কংগ্রেস পার্টির সরকার এবং অ-বিজেপি জোটকে সমর্থন করেছে, এইভাবে বিপর্যয়ের জন্য তাদের দায়িত্ব ভাগ করে নিয়েছে। তারা কংগ্রেস এবং বিজেপির মতোই ভারতীয় পুঁজিবাদের উত্সাহী প্রবক্তা।

সর্বশেষ রেল বিপর্যয় সমাজতন্ত্রের জন্য রাজনৈতিক লড়াইয়ের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেয় যা শ্রমজীবী মানুষের জীবন এবং সামাজিক চাহিদাকে মুনাফার দিকে চালনার থেকে এগিয়ে রাখে। দ্বিগুণ সংগ্রাম প্রয়োজন বিস্তীর্ণ ভারতীয় শ্রমিক শ্রেণীর মুখোমুখি কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক প্রশ্নগুলিকে স্পষ্ট করার জন্য এবং একটি বিপ্লবী বিকল্প গড়ে তুলতে, সেটি হল চতুর্থ আন্তর্জাতিকের আন্তর্জাতিক কমিটির একটি শাখা গড়ে তোলা।

Loading