বাংলা

মোদি সরকার কৃষকদের বিক্ষোভের বিরুদ্ধে পুলিশ-মিলেটারি দ্বারা লাগামহীন দমন-পীড়ন চালাচ্ছে

ভারতের নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন, অতি-ডানপন্থী বিজেপি সরকার ইতিমধ্যেই ১,০০,০০০-এরও বেশি কৃষক এবং ক্ষেতমজুরদের যোগদানকরা কৃষক বিক্ষোভ দমন করার জন্য একটি বিশাল রাষ্ট্রীয় অভিযান শুরু করেছে। এই দমন প্রক্রিয়ায় লক্ষেরও বেশী পুলিশ এবং আধা-সামরিক বাহিনীকে জড়িত করে, রাজ্যের সীমান্তে বিশাল বহু-স্তরীয় অবরোধ তৈরি করেছে এবং ড্রোনের সাহায্যে টিয়ার-গ্যাস দিয়ে হামলা চালাচ্ছে।

কৃষকরা মোদী সরকারের কাছে মৌলিক ফসলগুলির ন্যূনতম সমর্থন মূল্য (MSP) প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি পূরণের দাবি করছে।

এক বছরব্যাপী কৃষকের প্রতিবাদ, যা ২০২০-২০২১ সালে 'দিল্লি চলো' আন্দোলনের শেষে এই প্রতিশ্রুতিটি সরকারের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছিল। তেরো মাস ধরে, লক্ষ লক্ষ কৃষক ভারতের জাতীয় রাজধানী অঞ্চলের উপকণ্ঠে শিবির স্থাপন করে সম্প্রতিকালে গৃহীত তিনটি কৃষি ব্যবসায়িক আইন বাতিলের দাবিতে। শেষ পর্যন্ত, সরকার পশ্চাদপসরণ করতে বাধ্য হয়েছিল এবং কিছু আপত্তিকর আইন বাতিল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, কিন্তু তারপর এটি তার মূল প্রতিশ্রুতি থেকে সরে এসেছে।

ভারতের পাঞ্জাব-হরিয়ানা সীমান্তের শম্ভুতে নয়াদিল্লি যাবার জন্য মিছিল করা প্রতিবাদী কৃষকদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ার পরে কৃষকরা সুরক্ষিত স্থানের জন্য দৌড়াচ্ছেন। [এপি ছবি/রাজেশ সাচার] [AP Photo/Rajesh Sachar]

বিজেপি রাজ্য সরকারগুলির সাথে একযোগে কাজ করে, মোদি ২০২০-২০২১ সালের মত জনগণের পুনরুত্থান রোধ করতে বদ্ধপরিকর, পাছে এটি এই বসন্তে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ভারতের সাধারণ নির্বাচনে তৃতীয় বারের জন্য তাঁর ক্ষমতায় আসার পথকে লাইনচ্যুত না করে দেয়।

সোমবার, বিক্ষোভ শুরু হওয়ার আগের দিন, হরিয়ানার বিজেপি রাজ্য সরকার, যা দিল্লি এবং পাঞ্জাবের মধ্যস্থানে অবস্থিত, উত্তর-পশ্চিম ভারতীয় রাজ্য যেখানে কৃষকদের আন্দোলন কেন্দ্রীভূত, সেখানে দমনমূলক বিভিন্ন ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করেছে। এর মধ্যে রয়েছে পাঞ্জাব সংলগ্ন জেলাগুলিতে আধাসামরিক বাহিনী এবং রাজ্য পুলিশের ১১৪ টি কোম্পানি মোতায়েন করা, মূল রাস্তাগুলি অবরোধ করা এবং ফৌজদারি আইনের ১৪৪ ধারার অধীনে রাজ্যের বেশিরভাগ অংশে জমায়েত নিষিদ্ধ করা, যেই আইন চার বা তার বেশী লোকের সমস্ত জনসমাবেশকে নিষিদ্ধ করে। সরকার ১৫ই ফেব্রুয়ারির পর্যন্ত রাজ্যের বেশিরভাগ অংশ জুড়ে মোবাইল এবং ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করেছে।

গতকাল যখন পাঞ্জাবের কৃষকরা হরিয়ানার সীমান্তে পৌঁছয়, তখন তাদের সামনে এগিয়ে যেতে বাধা দেওয়ার জন্য বড় কংক্রিটের স্ল্যাব এবং কন্টেইনার ও রাস্তা জুড়ে কাঁটাতার জড়িয়ে থাকা ব্যারিকেডগুলির মুখোমুখি হয়েছিল। বিক্ষোভকারীদের যাওয়ার পথে ট্রাক্টর এবং অন্যান্য যানবাহনের টায়ার পাংচার করার জন্য পেরেকও বিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল। হরিয়ানা এবং দিল্লির সীমান্তে যেমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল, প্রতিবাদকারী কৃষকদের রাজধানী অঞ্চলে প্রবেশ করতে বাধা দেওয়ার জন্য সেখানে প্রায় ৫০,০০০ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। দিল্লি পুলিশ বিজেপি কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে যদিও অঞ্চলটি বিরোধী দল AAP দ্বারা শাসিত।

শীঘ্রই নিরাপত্তা বাহিনী এবং কৃষকদের মধ্যে হিংস সংঘর্ষ শুরু হয়। হরিয়ানা রাজ্য পুলিশ কৃষকদের উপর টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে যখন তারা পাঞ্জাব ও হরিয়ানার মধ্যে শম্ভু সীমান্তে পৌঁছয়। হরিয়ানা থেকে দিল্লিতে একটি ক্রসিংয়ে, মিডিয়া রিপোর্ট করেছে যে পুলিশের বিশেষ কমিশনার রবীন্দ্র যাদব মাইক নিয়ে পুলিশকে উস্কে দিচ্ছেন, 'আমাদের টিয়ার গ্যাসের শেল ছুড়তে হবে, লাঠি (লাঠি) ব্যবহার করতে হবে এবং নিজেদেরকে বাঁচাতে হবে।'

দিনের শেষে, কৃষক প্রতিনিধিরা একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “আমাদের প্রায় ৬০ জন লোক আহত হয়েছে। সরকার কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটিয়ে ও রাবার বুলেট ছুঁড়ে আমাদের উস্কানি দিচ্ছে।” কৃষক নেতা সারওয়ান সিং পান্ধে এই মঙ্গলবারকে 'ভারতের ইতিহাসে একটি কালো দিন' বলেছেন। মোদি সরকার যেভাবে কৃষক ও কৃষক নেতাদের আক্রমণ করেছে তা লজ্জাজনক।”

বিজেপি সরকার দিল্লিতে একটি স্টেডিয়াম তাঁদের অধিকারে রাখতে চেয়েছিল যদি বিক্ষোভকারী কৃষকরা রাজধানীতে প্রবেশ করতে সফল হয় তবে তাঁদের গণহারে আটক করে রাখতে। যাইহোক, স্থানীয় AAP সরকার স্টেডিয়াম দিতে অস্বীকার করে, ঘোষণা করেছিল যে কৃষকরা যে বিষয়গুলি নিয়ে প্রতিবাদ করছে সেগুলি বৈধ।

মঙ্গলবারের বিক্ষোভের আগে, পুলিশ ইতিমধ্যেই বিভিন্ন স্থানে শতাধিক কৃষককে গ্রেপ্তার করে। উদাহরণস্বরূপ, মধ্যপ্রদেশ পুলিশ রবিবার রাতে ভোপাল রেলওয়ে স্টেশন এবং অন্যান্য বেশ কয়েকটি জায়গায় দিল্লির দিকে যাওয়া কৃষকদের আটক করেছে। মধ্যপ্রদেশের কৃষক নেতা অনিল যাদব ও আরেক নেতাকে জেলে ভরা হয়েছে। কয়েকদিন আগে, উত্তর প্রদেশের নয়ডা এবং গ্রেটার নয়ডার কয়েকশ কৃষকদের পার্লামেন্টে যাবার বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশ নির্মমভাবে আক্রমণ করেছিল।

দিল্লি পুলিশ, তাদের অংশে, ট্রাক্টর, ট্রাক বা অন্যান্য যানবাহনের মিছিলকে এক মাসের জন্য প্রবেশ নিষিদ্ধ করে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। দ্য হিন্দু জানিয়েছে পুলিশ কমিশনার সঞ্জয় অরোর একটি আদেশ জারি করে ঘোষণা করেছেন, 'মানুষের জমায়েত, সমাবেশ এবং লোক বহনকারী ট্রাক্টর ট্রলির প্রবেশের উপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা থাকবে।'

মোদি সরকার শুরুতেই কৃষক বিক্ষোভ আন্দোলনকে বাতিল করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এই ভয়ে যে এটি গণ বিরোধের জন্য একটি সমাবেশস্থল হয়ে উঠবে ঠিক যখন তারা পুনরায় নির্বাচনের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচার শুরু করতে চলেছে।

ভারতীয় বুর্জোয়া এবং কর্পোরেট মিডিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী অংশগুলির দ্বারা সমর্থিত এবং রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে তার বিরোধীদের মেরুদণ্ডহীন এবং ডানপন্থী চরিত্রের সুযোগ নিয়ে, মোদী সরকার তার কথিত গণ সমর্থনের ভিত্তিতে রাজনৈতিক অজেয়তার একটি চিত্র তুলে ধরতে চেয়েছে।

ভারতের রাজধানীতে কৃষকদের একটি চলমান গণ-বিক্ষোভ এই মিথ্যা আখ্যানের সাথে সাথে সংশ্লিষ্ট কল্পকাহিনীকে মিথ্যা বলে দেবে যে মোদির অধীনে ভারত দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়নের সম্মুখীন হচ্ছে এবং দ্রুত একটি 'মধ্যম আয়ের' দেশে পরিণত হচ্ছে। বাস্তবে, ভারতের পুঁজিবাদী বৃদ্ধির ফল ভারতীয় সমাজের সবচেয়ে সুবিধাপ্রাপ্ত স্তরগুলির একটি ক্ষীণ অংশ দ্বারা একচেটিয়াভাবে কুক্ষিগত করা হয়েছে। আজ ভারতীয়দের মধ্যে সবচেয়ে উপরে থাকা ১ শতাংশ মানুষের কাছে দেশের সমস্ত সম্পদের ৪০ শতাংশেরও বেশি, যেখানে নীচের ৫০ শতাংশ, অর্থাৎ ৭০ কোটিরও বেশি মানুষ মাত্র ৩ শতাংশের মালিক।

মোদি সরকার ২০২০-২১ জুড়ে কৃষক বিক্ষোভের সময় নৃশংস দমন-পীড়নকে অবলম্বন করেছিল, যদিও শেষ পর্যন্ত এটি নির্ধারণ করেছিল যে কৃষকদের সাথে সর্বাত্মক সংঘর্ষ অত্যন্ত রাজনৈতিক ঝুঁকিপূর্ণ এমন পরিস্থিতিতে যেখানে তারা শ্রমিক শ্রেণীর মধ্যে এবং ভারত জুড়ে গ্রামীণ শ্রমজীবীদের থেকে ব্যাপক সমর্থন উপভোগ করছিল।

বিজেপি সরকার কৃষক ও কৃষক ইউনিয়ন নেতাদের বিরুদ্ধে একাধিক আইনি মামলা দায়ের করেছে, এবং কৃষকদের বিক্ষোভে সমর্থন দেওয়া কর্মীদের হয়রানি ও গ্রেপ্তার করেছে। হার্ট অ্যাটাক, ঠাণ্ডা, কোভিড-১৯ এবং অন্যান্য অসুস্থতায় প্রতিবাদস্থলেই ২০০ জনেরও বেশি কৃষক মারা গেছেন। বিক্ষোভের সময় নিহত কৃষকদের মধ্যে এই চারজনও ছিলেন যারা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্রের ছেলের দ্বারা একটি গাড়ির চাপা দেওয়ায় মারা যান।

২০২৪ সালে, মোদী এবং বিজেপির রাজ্য সরকারগুলি কৃষকদের আন্দোলন শুরু হওয়ার আগেই তা দমন করতে বদ্ধপরিকর। একই সময়ে, এটি ২০২১ সালে যেমন করেছিল, এটি বিভিন্ন কৃষক সংগঠনকে বিভক্ত করার চেষ্টা করছে - তাঁদের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে, যার বেশিরভাগই বিরোধী দলগুলির সাথে সম্পর্কযুক্ত এবং সাধারণত সম্পন্ন কৃষকদের দ্বারা পরিচালিত।

মোদি সরকার মঙ্গলবার শেষের দিকে নিশ্চিত করেছে যে তারা কৃষক ইউনিয়নগুলির সাথে তৃতীয় দফা আলোচনায় সম্মত। এটি বুধবার হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। যাইহোক, বিরোধের বিষয়বস্তুতে, সরকার স্পষ্ট করে দিয়েছে যে এটি MSP প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে 'বাধার' উপর বারবার জোর দিয়ে কোনো ভিত্তি ছাড়তে চায় না।

'আমরা আলোচনার বিরোধিতা করছি না,' বলেছেন কে.ভি. বিজু, সম্মিলিত কিষাণ মোর্চা (ইউনাইটেড ফার্মার্স ফ্রন্ট)-অরাজনৈতিক বা এসকেএম-এনপি-র একজন সিনিয়র নেতা। 'আমরা (আলোচনার) ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করব এবং যদি তারা ব্যর্থ হয়, কৃষকরা অবরোধ ভাঙ্গবে এবং দিল্লির দিকে মিছিল শুরু করবে।' সম্মিলিত কিষাণ মোর্চা (ইউনাইটেড ফার্মার্স ফ্রন্ট) থেকে বিভক্ত হওয়া, যা ২০২০-২১ কৃষক আন্দোলনের আন্দোলনের সময় তৈরি হয়েছিল, SKM-NP হল বর্তমান আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী দুটি প্রধান সংগঠনের মধ্যে একটি। অন্যটি কিষাণ মজদুর মোর্চা বা কেএমএম।

কিছু কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশনের সাথে একটি যৌথ পদক্ষেপে, প্রতিবাদী কৃষক গোষ্ঠীগুলি ১৬ই ফেব্রুয়ারি ভারতের গ্রামীণ ক্ষেত্রতে বন্ধের ডাক দিয়েছে, এই সময়ে তারা সবজি এবং অন্যান্য ফসলের সরবরাহ এবং ক্রয় স্থগিত করবে এবং সরকারী আধিকারিকদের এবং রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এবং বেসরকারী শিল্প বন্ধ করবে।

যেমনটি প্রত্যাশিত, বিরোধী দলগুলি তাদের নির্বাচনী উচ্চ আশা বাঁচাতে কৃষকদের প্রতিবাদকে পুঁজি করার চেষ্টা করছে। মঙ্গলবার কংগ্রেস পার্টির নেতা রাহুল গান্ধী দাবি করেছেন, 'যদি ইন্ডিয়া জোট, সরকার গঠন করে, আমরা MSP-এর আইনি গ্যারান্টি দেব।'

কংগ্রেস পার্টির নেতৃত্বে, সম্প্রতি পর্যন্ত ভারতীয় বুর্জোয়াদের জাতীয় সরকারের পছন্দের দল, ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টাল ইনক্লুসিভ অ্যালায়েন্স হল একটি ডানপন্থী নির্বাচনী জোট যা প্রায় দুই ডজন দলের সমন্বয়ে গঠিত, যার মধ্যে রয়েছে ভারতের স্তালিনবাদী কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী) বা সিপিএম এবং ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিআই)। যদিও এটি 'ধর্মনিরপেক্ষতার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করার জন্য হিন্দু আধিপত্যবাদী বিজেপিকে নিন্দা করে', ইন্ডিয়া জোট নিজেই হিন্দু অধিকারের সাথে যোগ দেয় এবং বিজেপির মতো আরও 'বিনিয়োগকারী সংস্কার' এবং চীন-বিরোধী ভারত-মার্কিন সামরিক-কৌশলগত জোটকে সমর্থন করে।

উল্লেখযোগ্যভাবে, কৃষকদের মুখপাত্র সারওয়ান সিং পান্ধের, MSP-এর আন্দোলনকে সমর্থন করার জন্য কংগ্রেসের দাবিগুলিকে খারিজ করেছেন। 'কংগ্রেস পার্টি,' তিনি মঙ্গলবার ঘোষণা করেছিলেন, 'আমাদের সমর্থন করে না।' নিঃসন্দেহে অনেক কৃষকের অনুভূতি প্রকাশ করে, তিনি উল্লেখ করেছেন যে কংগ্রেস পার্টি যা দীর্ঘ সময় ধরে ভারতের সরকারের নেতৃত্ব করেছে কখনই এমএসপি চালু করেনি: “আমরা কংগ্রেসকে বিজেপির মতোই সমানভাবে দায়ী মনে করি। এই আইনগুলি কংগ্রেস নিজেই এনেছিল। আমরা কারও পক্ষে নই, আমরা কৃষকদের আওয়াজ তুলি।”

Loading